তারুণ্যের জাগরণ ছাড়া মুক্তি সম্ভব না : জন্মদিনে মেনন

দুর্বার সংবাদ ডেস্ক: তারুণ্যকে গোষ্ঠীতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা ও দুর্নীতি-বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেছেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতেও তারুণ্যের শক্তির কারণেই লড়াইয়ে বিজয় অর্জিত হয়েছে। আগামীতেও তারুণ্যের জাগরণ ছাড়া মুক্তি আসবে না। তাই ফিলিস্তিনি গণহত্যার প্রতিবাদে দেশে দেশে ইসরায়েল ও সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তরুণ সমাজ।
রাশেদ খান মেনন গত ছয় দশক ধরে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত নাম। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরোধিতা থেকে শুরু করে ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯’র গণ-অভ্যূত্থান, ৭১ মুক্তিযুদ্ধ, জিয়া-এরশাদের সামরিক স্বৈরশাসনের বিরোধিতা কিংবা আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াই থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের নাম। ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত মেনন প্রতিদিনের রাজনৈতিক কর্মী। ৮০ বছর পেরিয়েও তারুণ্যদীপ্ত পদচারণ। একটি অসাম্প্রদায়িক সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের ক্লান্তিহীন নেতা।
বাংলাদেশের রাজনীতির এক বর্নিল চরিত্র। রাজপথের আন্দোলন, সংসদের প্রতিনিধিত্ব, দলের নেতৃত্ব – সকল ক্ষেত্রে সাহস আর মেধার সমন্বয়। দলের কর্মীদের অফুরান অনুপ্রেরণার উৎস। দেশের বামপন্থী রাজনীতির সবচেয়ে পরিচিত নাম।
গতকাল ১৮ মে রবিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রে বাংলাদেশ যুব মৈত্রী ও বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর যৌথ আয়োজনে ৮১তম জন্মদিনে তারুণ্যের সান্নিধ্যে একক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সভাপতি কমরেড তৌহিদুর রহমান তৌহিদের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক অদিতি আদৃতা সৃষ্টির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, যুব মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক তাপস দাস, ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি অতুলন দাস আলো । জন্মদিনে কেক কাটা, ফুলেল শ্রদ্ধা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘৫২ থেকে ’৭১-এ দেশের প্রতিটি লড়াইয়ে অনন্য অবদান রেখেছে এ দেশের তরুণ সমাজ।
এরশাদবিরোধী সংগ্রাম, ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থানেও তরুণ সমাজ মূল ভূমিকায় ছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ত্বরান্বিত হয়েছিল তরুণদের লড়াইয়ের কারণেই। তাই আজকের যে সমস্যা ও সংকট, তা থেকে উত্তরণে তারুণ্যকেই এগিয়ে আসতে হবে।
আজকের তারুণ্যকে লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানিয়ে বর্ষীয়ান বামপন্থী নেতা কমরেড মেনন বলেন, আমার বিশ্বাস তরুণরা ঘুরে দাঁড়াবেই।
দেশজুড়ে যে গোষ্ঠীতন্ত্র চলছে, সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী আগ্রাসন চলছে, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি নানাভাবে দেশটাকে গ্রাস করছে, আর দুর্নীতি-লুটপাটের মাধ্যমে ধনবৈষম্য বেড়েই চলছে। তার বিরুদ্ধে তারুণ্যের উত্থান ঘটিয়ে লড়াইকে জোরদার করতে হবে।