দুর্বার সংবাদ ডেস্ক: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ সাবান। সাবানের অনেক ধরন। কোনোটা সুগন্ধি, কোনোটা জীবাণুর বিরুদ্ধে বেশি শক্তিশালী। কোনোটাতে ক্ষারের পরিমাণ বেশি, কোনোটা একটু কোমল। হাত ধোয়ার জন্য তরল সাবানও পাওয়া যায় আজকাল। শাওয়ার জেল বা ইমোলিয়েন্টও একধরনের সাবানই বটে। সাবানের ধরন যেমনই হোক না কেন, অনেক পরিবারেই একাধিক সদস্য একই সাবান ব্যবহার করেন। আদতে কি ব্যাপারটা স্বাস্থ্যকর? সাবান ত্বককে পরিষ্কার করে। তাতে ধূলাময়লা ও রোগজীবাণু থেকে ত্বক থাকে সুরক্ষিত। ত্বকের জীবাণু নাক, মুখ বা চোখের সাহায্যে দেহের ভেতর ঢুকে পড়লেও মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারে। তাই ত্বক পরিষ্কার করার গুরুত্ব অনেক বেশি। তবে সাবান কেবল এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজটুকুই করে না, বরং সাবান ত্বকে আর্দ্রতাও জোগায়। তরল সাবান, শাওয়ার জেল বা ইমোলিয়েন্ট এবং কম ক্ষারীয় সাবানের বার তুলনামূলক কোমল। আর্দ্রতা বেশি পাওয়া যায় এসব সাবান থেকে। পরিবারের সদস্যদের বয়স, ত্বকের অবস্থা, পেশা প্রভৃতির কারণে ভিন্ন ধরনের সাবান প্রয়োজন হতে পারে। সবদিক বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, একই সাবান সবার ব্যবহার করা উচিত হবে কি না। এ বিষয়ে জানালেন হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আফজালুল করিম।

কার জন্য কোন সাবান

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাধারণ যেকোনো সাবানই ভালো। তবে মুখমণ্ডলের জন্য কোমল সাবান কিংবা ফেসওয়াশ বেছে নেওয়া প্রয়োজন। মুখমণ্ডল, কুঁচকি ও তলপেটের নিম্নাংশের ত্বক বেশ সংবেদনশীল। এই অংশের ত্বকে অবশ্যই খুব কোমল সাবান প্রয়োগ করা উচিত। কোমল সাবান ত্বককে আর্দ্র রাখে। হাত-পায়ের জন্য জীবাণুনাশী সাবান বেছে নেওয়া যেতে পারে। এগুলো অবশ্য একটু ক্ষারীয়। বাইরের ধুলাবালুতে যাঁদের লম্বা সময় কাজ করতে হয় কিংবা যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত, তাঁদের মুখমণ্ডল, কুঁচকি ও তলপেটের নিম্নাংশের ত্বক ছাড়া বাকি সব অংশের ত্বকের জন্য জীবাণুনাশী সাবান বেছে নেওয়া ভালো। শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য প্রয়োজন কোমল সাবান। তবে পায়ের নিচটায় সাবান লেগে থাকলে পিছলে পড়ার ঝুঁকির কথাও মাথায় রাখুন। বিশেষত বয়স্কদের ক্ষেত্রে পায়ের নিচের সাবান ভালোভাবে ধুয়ে ফেলার বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। আবহাওয়া শুষ্ক থাকলে সবার জন্যই এমন সাবান বেছে নেওয়া উচিত, যা আর্দ্রতা দেয়।

যদি সাবানের প্রয়োজন এক হয়

বুঝতেই পারছেন, পরিবারের সবার জন্য প্রয়োজনীয় সাবানের ধরনটি এক না-ও হতে পারে। তাই প্রয়োজন বুঝে প্রত্যেকের জন্য আলাদা সাবান বেছে নেওয়া উচিত। তবে সাবানের প্রয়োজন যদি এক হয়, তাহলে কিন্তু একই সাবান ব্যবহার করলে ক্ষতি নেই। তা সেটি তরল সাবান, শাওয়ার জেল বা ইমোলিয়েন্টই হোক, কিংবা হোক সাবানের বার। ত্বকের উপরিভাগে লেগে থাকা জীবাণু সাবানের মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে, এটি ভুল ধারণা।

তবে যদি কারও ত্বকে সংক্রমণ থাকে…

কারও ত্বকে জীবাণু সংক্রমণ থাকলে অবশ্য একটু সতর্ক হওয়া উচিত। সংক্রমণ হওয়ার অর্থ হলো জীবাণুগুলো সক্রিয় অবস্থায় তাঁর ত্বকে রয়েছে। তাই তাঁর ব্যবহৃত সাবান পরিবারের অন্যদের ব্যবহার না করাই ভালো। ত্বকে সংক্রমণের ক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যক্তিগত ব্যবহার্যসামগ্রীও আলাদা রাখার পরামর্শই দেওয়া হয়। যেমন ছত্রাক সংক্রমণ, খোসপাঁচড়া প্রভৃতি চর্মরোগ সহজেই একের থেকে অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এসব ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *