ছবি: এনডিটিভি

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি মনমোহন সিংকে দেশের অন্যতম ‘বিশিষ্ট নেতা’ বলে অভিহিত করেছেন। মনমোহন ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ভারতের ‘অর্থনৈতিক উদারীকরণের স্থপতি’ হিসাবে বিবেচিত হন। গত বৃহস্পতিবার ৯২ বছর বয়সে মারা যান।

গার্ড অব অনার-এর মাধ্যমে তার কফিন শহরের মধ্য দিয়ে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় রাজধানীজুড়ে শোকার্ত মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে জড়ো হয়। শ্মশানে মোদি, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এবং মনমোহনের কংগ্রেস দলের প্রবীণ সদস্যদের সামনে বড় মেয়ে চিতায় আগুন দেন। ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক এবং মরিশাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ধনঞ্জয় রামফুলের মতো বিদেশি অতিথিরাও উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

শেষকৃত্যে উপস্থিত বিরোধী দলীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, আমরা একজন পরামর্শদাতা ও পথপ্রদর্শককে হারালাম। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর আগে বলেছেন, মনমোহন সিংয়ের ‘কৌশলগত দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক সাহস’ ছাড়া ভারতের সঙ্গে তার দেশের ‘অভূতপূর্ব মাত্রার সহযোগিতা’ সম্ভব হত না। তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের রাষ্ট্রনায়ক। একজন নিবেদিতপ্রাণ জনসেবক। সর্বোপরি তিনি একজন দয়ালু এবং নম্র ব্যক্তি ছিলেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে মনমোহনের মৃত্যুর পর ভারত সরকার সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করে।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ছবি: সংগৃহীত

প্রসঙ্গত, মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এবং ১৯৯১ সালে অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিপথ পরিবর্তন হয়। তিনি তার প্রথম বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন: ‘পৃথিবীর কোনো শক্তি এমন একটি ধারণাকে থামাতে পারে না, যার সময় এখন এসেছে।’ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অর্থনৈতিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলো অব্যাহত রেখেছিলেন। লক্ষ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনেন এবং বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান প্রধান অর্থনীতিগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে ভারতের উত্থানে অবদান রাখেন। ভারতের শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত প্রথম শিখ ব্যক্তি মনমোহন সিং ২০০৫ সালে ১৯৮৪ সালের দাঙ্গার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছিলেন। সে সময় প্রায় ৩ হাজার শিখ নিহত হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *