স্টাফ রিপোর্টার: বিস্ফোরক আইনের এক মামলায় সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদকে ফের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বুধবার মৌলভীবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এম মিজবা উর রহমান সাবেক এই মন্ত্রীর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। সে আদেশ অনুযায়ী শনিবার তাকে হেফাজতে নেয় শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। মৌলভীবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আবু নছর মোহাম্মদ মাসহুদ বলেন, “মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানায় বিস্ফোরক আইনে করা একটি মামলায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুস শহীদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে শুনানি শেষে আদালত তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।”

আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন আবেদন করলেও আদালত তা নামঞ্জুর করেন। বুধবার শুনানি শেষে তাকে মৌলভীবাজার কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। মৌলভীবাজারের জেল সুপার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার জানান, আদালতের নির্দেশে পুলিশ শনিবার তাকে হেফাজতে নিয়েছে। রিমান্ড শেষে আবার কারাগারে ফেরানো হবে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের ভোজপুর বাজারে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর গত ২৪ অক্টোবর ওই এলাকার মো. মাক্কু মিয়ার ছেলে যুবদল নেতা মো. আহাদ মিয়া বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা করেন। এতে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইফসুফ আলীসহ ৫৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া আব্দুস শহীদকে প্রধান আসামি করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আলাদা দুটি মামলা হয়। এসব মামলায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতার ওপর হামলা, ভাংচুর লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করা হয়।

মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) সংসদীয় আসনের  সাত বারের সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ, এবং ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদে হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও একাদশ জাতীয় সংসদে তিনি অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারে তিনি কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। গত ২৯ অক্টোবর রাতে ঢাকার উত্তরার বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে গত ৩০ অক্টোবর ঢাকায় বাসচালক আলমগীর হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাবেক এই মন্ত্রীকে চারদিনের জন্য রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

রিমান্ড শেষে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক ইমরান আহম্মেদ গত ৩ নভেম্বর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান। এরপর ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। শনিবার আবার রিমান্ডের জন্য তাকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *